রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে: তারেক রহমান

পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে, তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে। তারা কিন্তু বসে নেই।’

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সিলেট নগরের পূর্ব শাহী ঈদগাহ এলাকার সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি আয়োজিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। দিনভর চলা এ সম্মেলনে তিনি বিকেল চারটার দিকে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।

তারেক রহমান বলেন, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি। দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। মানুষ মনে করে, বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা নিরাপদ। এ জন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের এই আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনাদের।

যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখবেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এ জন্য যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব। আমাদের গণতন্ত্রের পক্ষে থাকতে হবে, গণতন্ত্রকে চালু রাখতে হবে। যেখানে যেটাই নির্বাচন হোক, সেটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে হতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, আজকে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আসুন, আমরা মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী নিজেদের গড়ে তোলার চেষ্টা করি। পলাতক স্বৈরাচারের অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করে যারা টিকে আছে, তারা আগামীতেও টিকে থাকবে বলে আমি মনে করি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউসের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিনসহ অনেকে।

দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার ৩১ দফা কর্মসূচির ওপর করা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তারেক রহমান।

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা সকল দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, ‘এটির (৩১ দফা) মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামোর অধিকাংশই আছে। আরও যত প্রস্তাব আসবে, তা যুক্তিসংগত হলে যুক্ত করা হবে। আজকে বিভাগ পর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনার পর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে তা নিয়ে যেতে হবে। বইয়ে অনেক কিছু সুন্দরভাবে লেখা থাকে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হয় মানুষকে। তাই ভালো নিয়ত থাকলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।’

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলার পথে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে বহু মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে এই প্রস্তাব (৩১ দফা) বাস্তবায়ন সম্ভব।

সকাল নয়টায় কর্মশালা শুরু হয়ে চলে বেলা সোয়া পাঁচটা পর্যন্ত। এতে সিলেট বিভাগের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা এবং সিলেট মহানগরের বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকেরা অংশ নেন।