অচিরেই নির্বাচনী রোডম্যাপে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শত অস্পষ্টতা কাটিয়ে অচিরেই নির্বাচনী রোডম্যাপে যাত্রা শুরু করবে আমাদের প্রিয় এই বাংলাদেশ। সেই যাত্রায় আবারো বলছি, মন দিয়ে শুনবেন দলের প্রতিটি নেতাকর্মী, আপনাদের বিশ্বস্ত সঙ্গী হচ্ছে দেশের গণতন্ত্রকামী স্বাধীনতা প্রিয় জনগণ, আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।
রোববার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি’র উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রোডম্যাপের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগামী দিনের কর্ম পরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণার কথা শুনলেই যদি উপদেষ্টাদের চেহারায় অস্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে, সেটি হবে অবশ্যই গণআকাঙ্ক্ষাবিরোধী। সরকারের তাদের সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের কাছে যত বেশি স্বচ্ছ থাকবে, জনগণও সরকারের প্রতি ততবেশি সমর্থনের হাত প্রসারিত রাখবে।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি করতে চাইছে? রাষ্ট্র মেরামতের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আর কতো মাস কিংবা কতো সময় প্রয়োজন, সেটি জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। সরকার জনগণের সামনে তাদের আগামী দিনের কর্ম পরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করলে এটি একদিকে জনগণের কাছে সরকারের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতাকেই নিশ্চিত করবে। অপরদিকে প্রশাসনিক কার্যক্রমেও গতিশীলতা বাড়বে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে দেশ ও স্বাধীনতা রক্ষা পেয়েছে। এই কারণে প্রায় আমি বলে থাকি, ১৯৭১ সাল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্জনের আর ২০২৪ সাল দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার। এমন পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে এবারের বিজয় দিবস অবশ্যই বেশি আনন্দের গৌরবের এবং অনেক বেশি অর্থবহ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই, আগামীর বাংলাদেশে প্রতিটি স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস হয়ে উঠবে জনগণের প্রতি রাষ্ট্র ও সরকারের দায় কিংবা প্রতিশ্রুতি পূরণের একটি অর্থবহ দিন।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা এখন যেটা চাই, প্রত্যেকটি বাংলাদেশি এই মুহূর্তে যেটা চায় সেটা হচ্ছে, তারেক রহমানের নেতৃত্ব চায় যেন দেশে ফিরে আসার জন্য চায়। তিনি বলেন, আসুন আমাদের নেতা তারেক রহমানের যুগান্তকারী ৩১ দফা কর্মসূচিতে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমি বারবার যে কথাটা বলছি, আবার বলতে চাই যে, সবচেয়ে বেশি যে প্রয়োজন এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সেটা হচ্ছে যে, আমাদের অবশ্যই অতি দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্যদিয়ে এই সংস্কারের পথটা আমাদের সুগম করতে হবে। সেটাই হচ্ছে একমাত্র যোগ্য কাজ, সেটাই হবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। আসুন আমরা যারা বিএনপি’র নেতা-কর্মী-সমর্থক রয়েছি, আমরা সবাই একসঙ্গে একযোগে এই লক্ষ্যে এগিয়ে যাই।
বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, যুবদলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন বক্তব্য রাখেন।