সোমবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক পেলেন বাংলাদেশের নৌবাহিনীর ১৯৯ সদস্য

দক্ষিণ সুদানের জুবা ও মালাকাল প্রদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান রাখা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১৯৯ সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক প্রদান করা হয়েছে। এই অর্জন উদযাপন করতে গত বুধবার জুবায় একটি বিশাল মেডেল প্যারেডের আয়োজন করা হয়, যেখানে বাংলাদেশের ফোর্স মেরিন ইউনিট (বেনএফএমইউ-১০) এর সদস্যরা অংশ নেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড নেশন্স মিশন ইন সাউথ সুদান (আনমিস)-এর ফোর্স কমান্ডার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহান সুব্রামানিয়াম। তিনি তাদের সাহসিকতা এবং দক্ষতার জন্য প্রশংসা জানিয়ে এই শান্তিরক্ষা অভিযানে অবদান রাখার জন্য স্বীকৃতি স্বরূপ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের মধ্যে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মেডেল বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে আনমিস এর বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মেডেল প্যারেডের সময় ফোর্স কমান্ডার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, নীল নদের বিপদসংকুল পরিবেশ এবং সংঘর্ষপূর্ণ অঞ্চলে এই সেনারা অসাধারণ সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে অপারেশন পরিচালনা করে আসছে। তারা জাতিসংঘের জন্য জ্বালানি, খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পরিবহন, নদীপথে নিয়মিত টহল, উদ্ধারের অপারেশন, ডাইভিং ও রেকি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই সব অবদান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গর্বে অভিষিক্ত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অতিরিক্ত, এই পদকপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশের নৌবাহিনী দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে আসছে। এই মিশনে বাংলাদেশ একমাত্র মেরিন ফোর্স হিসেবে কাজ করছে, যেখানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ফোর্স মেরিন ইউনিট নীল নদের বিস্তার এলাকায় জাতিসংঘের ম্যান্ডেট বাস্তবায়নে নিয়োজিত রয়েছে। তারা দীর্ঘ ১৩১১ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিয়ে ৭১টি লজিস্টিক অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। মোতায়েনের পর থেকে তারা দক্ষিণ সুদান সরকার ও জনগণের উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে।

এছাড়াও, উত্তাল আরব সাগরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’ ধর্মের পতাকা উড়িয়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক জলসীমায় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে।