শুক্রবার, ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে কংগ্রেস কার্যালয়ে বিজেপি হামলা ও সংঘর্ষ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যে কংগ্রেস কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এই হামলার সূচনা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার প্রয়াত মাকে অশালীন ভাষায় কটাক্ষের মাধ্যমে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতে তা স্পষ্ট হয়েছে যেখানে দেখা যায়, দুই দলের কর্মীরা দলীয় পতাকাসহ ডান্ডা দিয়ে একে অপরের উপর আঘাত চালাচ্ছেন। এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কংগ্রেস এই ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ‘ভোটার অধিকারের যাত্রা’ কার্যক্রমের সময় দরভাঙ্গায় এক কংগ্রেস নেতার গায়ে দলের পতাকা জড়ানো একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীকে অশালীন ভাষায় কটু মন্তব্য করেন। এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর বিজেপি থানায় এফআইআর দায়ের করে এবং কংগ্রেসের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়। দরভাঙ্গা পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

বিহারেও শনিবার পাটনায় বিজেপি রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে। এ সময় কংগ্রেস কর্মীরাও মাঠে আঘাত হানে, ফলে পরিস্থিতি মারামারিতে দখল হয়ে যায়। পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করলেও পাটনায় এখনও চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

অপরদিকে, এই উত্তেজনা কলকাতার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। শহরের জাতীয় কংগ্রেসের রাজ্য সদরদপ্তর বিধান ভবনের সামনে শুক্রবার বিক্ষোভের আয়োজন করে বিজেপি। বিক্ষোভ চলাকালীন কিছু বিজেপি সমর্থক কংগ্রেস দপ্তরে ঢুকে ভাঙচুর চালায় এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে। এর পাশাপাশি, রাহুল গান্ধীর ছবি ও বিভিন্ন ব্যানার-পোস্টার ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান প্রদেশ কংগ্রেস।

কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, “রাজনীতিতে দেউলিয়া ব্যক্তিরাই এই ধরনের কাজ করতে পারে। বিজেপি সব সময় ইন্ধন দেয় আমাদের বিরুদ্ধে গোপন চোরাচালানের জন্য। এই সময় তারা দপ্তর খালি পাওয়ায় সুযোগ নিয়ে দুষ্কর্ম করছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই দোষীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার।”

বিহার কংগ্রেসের নেতা অশুতোষ পাল্টা অভিযোগ করেন, এই ঘটনার পেছনে সরকারেরই ইন্ধন রয়েছে এবং নীতীশ কুমারও ভুল করছেন। তিনি আরও বলেন, “আমরা জবাব দেবো।”

অন্যদিকে, বিজেপি নেতা নীতিন নবীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “মা সম্মান নিয়ে যা হয়েছে তার বদলা বাংলার প্রতিটি ছেলে নিবে। এর জবাব আমরা অবশ্যই দেব।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোশ্যাল মিডিয়াতে কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়ে বলেন, “রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের রাজনীতি নিচের দিকে নেমে গেছে। একজন গরিব মায়ের সন্তান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, এটাই তাদের সহ্য হয় না। প্রধানমন্ত্রী ও তার প্রয়াত মাকে নিয়ে এই ভাষা লজ্জাজনক এবং গণতন্ত্রে কলঙ্ক।”

বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেন, “এ ধরনের অশালীন হামলা সব সীমা পার হয়েছে। রাহুল গান্ধী ও তৈজস্বী যাদবের ক্ষমা চাওয়া উচিত।”

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ও তার প্রয়াত মাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য বেআইনি ও অনুচিত, যাতে সহ্য করা হবে না।”