আহতের কারণে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ নন। দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অভিযোগ করেছেন যে, তাকে সুস্থ দেখানোর একটি পরিকল্পনা চলমান। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রাশেদ খান বলেন, নুরুল হক নুর এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। তার নাক দিয়ে এখনও রক্ত পড়ছে, নাক বাঁকা হয়ে গেছে। মাথায় আঘাতের কারণে তিনি হাঁটতে পারছেন না এবং মুখ হা-ও করতে পারছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে নুরকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই থাকছে বলে জানানো হলেও, তা মোটেও ঠিক নয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নুরুল হক নুর বর্তমানে প্লেনে উঠার মতো অবস্থায় নেই। তবে আমরা সিঙ্গাপুরে নিয়ে তার চিকিৎসার জন্য দাবি জানিয়েছি। আশা করছি, তিনি একটু সুস্থ হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই তাকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরো জানান, গতকাল হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল যে নুরুল হক নুর সম্পূর্ণ সুস্থ, কিন্তু সেটা সত্য নয়। তিনি এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ নন এবং তাকে সুস্থ দেখানোর জন্য পরিকল্পনা চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি নুরের অবস্থা দেখার জন্য আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম, যেখানে ডাক্তাররা উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, তার নাক থেকে জমাট বাঁধা রক্ত বের হচ্ছে। অবিলম্বে ডিরেক্টরকে ফোন করে অবস্থা জানানো হয়, তিনি এসে অন্যান্য ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করেন এবং নুরের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার নির্দেশনা দেন। তবুও গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, নুরুল হক নুর সুস্থ আছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার এখনো আগের মতোই অবস্থায় থাকায় আমি বিশ্বাস করি না যে তিনি সুস্থ।
রাশেদ খাঁন বলেন, আমি নুরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি, কিন্তু তিনি কথা বলতে পারছেন না। তার চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, মুখ দিয়ে কথা বলতে পারছেন না, মুখের মালিশে প্রচন্ড ব্যথা এবং ব্রেনে আঘাতের চিহ্ন থাকার কারণে তার মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ করছে না। তিনি আরও বলেন, নুরুল হক নুর এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ হননি, এই হামলা তার জন্য ছিল হত্যার উদ্দেশ্যে।
তিনি আরো যোগ করেন, এই হামলার ফলে জাতি একতাবদ্ধ হয়েছে। দেশের জনগণ চায়, আওয়ামী লীগসহ যারা ফ্যাসিবাদী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের অবশ্যই নিষিদ্ধ করা হোক। ফ্যাসিবাদের দোসর সাবেক সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ফৌজদারি ফাইল থাকা সত্ত্বেও এখনও কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা দেশের জন্য লজ্জাজনক। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অনুমতি না থাকলে এই ধরনের ঘটনা ঘটার কথা নয়। গণতন্ত্রের জন্য কাজ করা এই সংগঠনের নেতা নুরুল হক নুর ও তার নেতাকর্মীদের উপর হামলার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবশ্যই অবিলম্বে সরানো উচিত।
রাশেদ খাঁন দাবি করেন, নুরুল হক নুরকে সুস্থ দেখানোর পরিকল্পনা কখনো ফলপ্রসূ হবে না। হামলার সঠিক বিচার হয়, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয় এবং যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের যথার্থই শাস্তি পেতে হবে।