সোমবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এনবিআর চেয়ারম্যানের দাবি: ন্যূনতম কর একটি কালো আইন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোঃ আবদুর রহমান খান বলেছেন, ন্যূনতম কর আইনটি সত্যিই একটি কালো আইন। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘করপোরেট কর ও ভ্যাটে সংস্কার: এনবিআর এর জন্য একটি বিচারমূলক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এই মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী এবং করসংক্রান্ত বিশ্লেষকদের মতে, ন্যূনতম করটি স্বাভাবিকভাবে ব্যবসায়িক স্বার্থের পরিপন্থী এবং এটি একটি অনুচিত আইন। তিনি একেএই সময়ে মন্তব্য করেন, করের জন্য দেশের প্রবৃদ্ধির স্বার্থে একটি সমতুল্য ও ব্যবসায়ীদের জন্য সুবিধাজক পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে প্রাসঙ্গিক করনীতি কার্যকর হয়। এনবিআর চেয়ারম্যানের দাবি, করের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে হলে করসংকোচনের পাশাপাশি কর প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, করছাড় ও করসংক্রান্ত সুবিধাদি দিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করা হলেও, এখনো কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে সক্ষম হচ্ছেন না। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন করের পরিমাণ বৃদ্ধি, যদিও বর্তমানে করের হার কমে যাচ্ছে। তিনি জানান, গত বছর দেশে কর-জিডিপি অনুপাত ছিল ৭.৪ শতাংশ, আর এবছর তা কমে ৬.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য উদ্বেগজনক। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ঋণের বোঝা বাড়ছে, কারণ মূলত রাজস্ব আদায় খুব কম থাকায় পরবর্তী প্রজন্মের উপর ঋণের চাপ বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় এনবিআর একটি ডিজিটাল ও অটোমেটেড সিস্টেম তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে কর נফরমেশন সহজ ও দ্রুত হয়। তিনি জানান, অডিটের জন্য ম্যানুয়াল পদ্ধতি বন্ধ করে অডিট নির্বাচন কঠোরভাবে ঝুঁকি ভিত্তিক হবে, যাতে স্বচ্ছতা ও সততা প্রতিষ্ঠা করা যায়। কর জাল বা কর পরিশোধে প্রতারণা রোধে করদাতাদের জন্য আরও বেশ কিছু আধুনিকায়ন প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই সংলাপে অংশ নেয়া গবেষকদের মতে, ৮২ শতাংশ ব্যবসায়ী current কর হারকে ‘অন্যায্য’ এবং ব্যবসার জন্য বড় বাধা হিসেবে দেখেছেন। তাদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ জানিয়েছেন, কর কর্মকর্তাদের জবাবদিহির অভাব প্রধান প্রতিঘাত। উচ্চ অনুরোধ ও জটিল ভ্যাট আইনের কারণে ব্যবসায়ীরা নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ঢাকা ও আশপাশের ৩৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ওপর পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা যায়, ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগই নানা রকম দুর্নীতি ও অস্পষ্ট বিধানের কারণে সমস্যা অনুভব করেন।