বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে অপ্রত্যাশিতভাবে একটিকে কমিয়ে জেলাকে তিনটি সংসদীয় আসনে বদলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এলাকাজুড়ে বিশাল আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন দীর্ঘদিন ধরে এই পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছিল, যা স্থানীয় জনগণের মাঝে গভীর অসন্তোষ সৃষ্টি করে। ৩০ জুলাই প্রকাশিত প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল যে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাগেরহাটের চারটি আসনকে তিনটিতে সংক্ষেপিত করা হবে। এরপর থেকেই বাগেরহাটের সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু করেন। তাদের দাবি ছিল, চারটি সংসদীয় আসন বহাল থাকুক এবং জনগণের ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্বের স্বার্থে কোনও পরিবর্তন আনতে না। তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে, যেখানে চারটি আসন পরিবর্তন করে তিনটি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে বাগেরহাটবাসীর মধ্যে গভীর অসন্তোষ সৃষ্টি হয়, যা তাদের আন্দোলনের সূচনা করে। সোমবার সকালে শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে গাজীপুর ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথে ব্যাপক হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি। মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট, মোংলা ও পিরোজপুর মহাসড়কসহ জেলার অন্তত ২০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গাড়ি, গাছের গুড়ি ও বেঞ্চ রেখে নানা প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করছেন সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। হরতালের সময় বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা জেলা প্রশাসকের ভবনের সামনে অবস্থান নেন, যাবতীয় কার্যক্রমে অংশ নেয়। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, জামায়াত, বিএনপি ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। নেতৃত্বরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি উঠে আসলেও কর্তৃপক্ষ এর গুরুত্ব দেয়নি। তাঁদের ভাষ্য, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রতিবাদের দাবি রাখে এবং এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মানুষের গণআস্থা নষ্ট হয়েছে। আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের আন্দোলন জোরদার করতে সবাই যাত্রা চালিয়ে যাবেন বলে জানা গেছে।
