শনিবার, ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক রহমান-বাবরের খালাসের রায় স্থায়ী

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সকল আসামির খালাসের রায় গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের আপিল বিভাগ স্থায়ী করলেন। এই রায়ের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে থাকা সকল অভিযোগ খারিজ হয়।

একইসঙ্গে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্ত নিয়ে হাইকোর্টের পূর্বের পর্যবেক্ষণগুলো বাতিল করা হয়েছে। আদালত উল্লেখ করেছেন, মামলার নতুন করে তদন্ত করতে হলে সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে থাকা ষোড়শ আদালত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন, যেখানে আরও পাঁচ বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে, আদালত রাষ্ট্রপক্ষের করা মামলা পুনর্বিবেচনা বা আপিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

সর্বোচ্চ আদালতে তারেক রহমানের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে, বিএনপির আইনজীবীরা ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আরও অনেকে। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক এবং অন্যান্য সহকারী অধিকারিকরা।

প্রসঙ্গত, গত বছর ১ ডিসেম্বর নিম্ন আদালত এই দুই সাবেক নেতা সহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দিয়েছিলেন। তখন তারা সবাই বিভিন্ন অংগে অভিযুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রোটিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপ-মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুও. ২০১৮ সালের ওই কাজে আদালত নির্দেশনা অনুযায়ী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা অবৈধ বলেছিল, কারণ মূল চার্জশিটে ত্রুটি ছিল।

এর পর, রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত বা হাইকোর্টে আপিল করে। গত জুনে, আপিল বিভাগ আপিলের অনুমতি দিয়েছেন।

নিম্ন আদালতের রায়ে, ২০১৮ সালে ২১ আগস্ট হামলা ও হত্যাকাণ্ডের জন্য মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা হয়েছিল। এই রায়ে বয়সের বিচার ও সাবেক নেতাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।

বিশেষ করে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, বিভিন্ন সেনা কর্মকর্তা ও জঙ্গি সংগঠনের নেতা। অপর পক্ষে, বিষখ্য জেল বা পলাতক অবস্থায় রয়েছেন তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ বেশ কয়েকজন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনা ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এই হামলার ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম একটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।